ফারুক ফেরদৌস
আরবি মাসগুলোর মধ্যে শাবান বিশেষ ফজিলতপূর্ণ মাস। রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) রমজানের পরে এ মাসটিতে সবচেয়ে বেশি রোজা রাখতেন। শাবান মাসের ১৫ তারিখের রাতটির বিশেষ ফজিলত বর্ণিত হয়েছে হাদিসে। রাসুল (সা.) বলেছেন,
يطلع الله إلى خلقه في ليلة النصف من شعبان، فيغفر لجميع خلقه إلا لمشرك أو مشاحن.
আল্লাহ মধ্য শাবানের রাতে তার সৃষ্টিকুলের দিকে দয়ার দৃষ্টি দেন এবং মুশরিক ও বিদ্বেষী ছাড়া সবাইকে ক্ষমা করে দেন। (সহিহ ইবনে হিব্বান: ৫৬৬৫)
দুর্বল সূত্রে বর্ণিত আরেকটি হাদিসে এসেছে,
إِذَا كَانَتْ لَيْلَةُ النِّصْفِ مِنْ شَعْبَانَ فَقُومُوا لَيْلَهَا وَصُومُوا يَوْمَهَا . فَإِنَّ اللَّهَ يَنْزِلُ فِيهَا لِغُرُوبِ الشَّمْسِ إِلَى سَمَاءِ الدُّنْيَا فَيَقُولُ أَلاَ مِنْ مُسْتَغْفِرٍ فَأَغْفِرَ لَهُ أَلاَ مُسْتَرْزِقٌ فَأَرْزُقَهُ أَلاَ مُبْتَلًى فَأُعَافِيَهُ أَلاَ كَذَا أَلاَ كَذَا حَتَّى يَطْلُعَ الْفَجْرُ
মধ্য শাবানের রাতে তোমরা নামাজ আদায় করো এবং দিনে রোজা রাখ। এ দিন সূর্য অস্তমিত হওয়ার পর আল্লাহ পৃথিবীর নিকটতম আকাশে নেমে আসেন এবং বলেন, কে আছ আমার নিকট ক্ষমাপ্রার্থী, আমি তাকে ক্ষমা করবো। কে আছ রিজিকপ্রার্থী, আমি তাকে রিজিক দান করবো। কে আছ রোগমুক্তি প্রার্থনাকারী, আমি তাকে নিরাময় দান করবো। কে আছ এই এই প্রার্থনাকারী… ফজরের সময় হওয়া পর্যন্ত তিনি এভাবে ডাকেন। (সুনানে ইবনে মাজা: ১৩৮৮)
শাবান মাসের এ রাতটিই আমাদের দেশে ‘শবে বরাত’ হিসেবে পরিচিত। এ রাতে আমাদের কর্তব্য বেশি বেশি নেক আমল ও ইবাদতের মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের চেষ্টা করা যেন আল্লাহর রহমত ও ক্ষমায় আমরাও শামিল হতে পারি।
শবে বরাতে যে আমলগুলো করবেন
১. ছোটবড় সব পাপ থেকে আল্লাহর কাছে কায়মনোবাক্যে ক্ষমাপ্রার্থনা করুন।
২. সব রকম শিরক ও হিংসা-বিদ্বেষ থেকে অন্তরকে পবিত্র করুন।
৩. আত্মীয় স্বজন, প্রতিবেশীদের সাথে মনোমালিন্য থাকলে তা দূর করুন। কারো প্রতি অন্যায় করে থাকলে ক্ষমা চেয়ে নিন, নিজেও সবাইকে ক্ষমা করে দিন।
৪. ফরজ নামাজের পাশাপাশি দীর্ঘ সময় নিয়ে নফল নামাজ পড়ুন।
৫. বেশি বেশি আল্লাহর জিকির করুন, আল্লাহকে অন্তর থেকে স্মরণ করুন।
৬. কবর জিয়ারত করতে যান। কবরস্থানে গিয়ে কিছুক্ষণ সময় কাটান। মৃত ব্যক্তিদের রুহের মাহফিরাতের জন্য দোয়া করুন।
৭. ১৫ শাবান দিনের বেলা রোজা রাখুন।
Leave a Reply